আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা , টেক যুক্তি ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আজ আমি আপনাদের জানাবো হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার সম্পর্কে জানুন এবং এগুলো এড়িয়ে চলুন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
হার্ট হচ্ছে আমাদের শরীরের একটি পেশীবহুল অঙ্গ যা রক্ত পাম্প করে। এটি বুকের বাম দিকে এবং ফুসফুসের মাঝখানে থাকে।
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার হলে ধরে নেওয়া হয় যেসব খাবার পরিহার্য হওয়া উচিত। এই ধরনের খাবারগুলি হার্ট স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং হার্ট রোগের ঝুঁকিতে বৃদ্ধি করতে পারে। কিছু ক্ষতিকর খাবারের উল্লেখ নিম্নে দেওয়া হলো:
খাবারের ধরণ | উদাহরণ | ক্ষতিকর উপাদান | কীভাবে ক্ষতি করে |
প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার | লাল মাংস (গরুর মাংস, ছাগলের মাংস, ভেড়ার মাংস), পূর্ণ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার (পুরো দুধ, মাখন, পনির), ভাজা খাবার (পোড়া ভাজা খাবার, ফাস্ট ফুড), প্রক্রিয়াজাত খাবার (বেকন, সসেজ, স্যালামি), কেক, কুকি, পেস্ট্রি (প্যাকেজজাত মিষ্টি) | স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট | LDL (খারাপ) কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়, HDL (ভালো) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, রক্তনালীতে প্লাক তৈরি করে, হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় |
উচ্চ চিনির পরিমাণযুক্ত খাবার | চিনিযুক্ত পানীয় (সোডা, জুস, এনার্জি ড্রিঙ্ক), মিষ্টি (চকোলেট, ক্যান্ডি, আইসক্রিম), প্রক্রিয়াজাত খাবার (সিরিয়াল, গ্রানোলা বার), টেবিল চিনি (চা, কফি, খাবারে মিষ্টি করতে ব্যবহৃত) | চিনি | রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়ায়, রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, ইনসুলিন প্রতিরোধের ঝুঁকি বাড়ায়, হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় |
লবণাক্ত খাবার | প্রক্রিয়াজাত খাবার (চিপস, ক্র্যাকার, ফ্রোজেন খাবার), রেস্টুরেন্টের খাবার (অনেক রেস্টুরেন্টের খাবারে লবণ বেশি থাকে), ফাস্ট ফুড (বার্গার, পিজা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই) | লবণ | রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় |
অ্যালকোহল | – | অ্যালকোহল | রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি করে, ক্যালোরি বৃদ্ধি করে, হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় |
উচ্চ কোলেস্টেরল ও অতিরিক্ত ফ্যাট | মিষ্টি, পেঁপে রোল, বেকারি পনির, পটেটো চিপস, বোরহানী, সামুসা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চটপটি, মুরগির চার্গা, ডোনাট, বরফক্রিম, আইসক্রিম, বাটার, ঘি, তেলের চিকেন ও পালদা গরুর মাংস | কোলেস্টেরল ও অতিরিক্ত ফ্যাট | LDL (খারাপ) কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়, HDL (ভালো) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, রক্তনালীতে প্লাক তৈরি করে, হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় |
হার্টের জন্য উপকারী খাবার
হার্টের জন্য উপকারী কিছু খাবারের তালিকা রয়েছে।নিচে দেওয়া খাবারগুলো হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। তবে সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খাদ্যশ্রেণী | উদাহরণ | উপকারিতা |
ফলমুল ও সবজি | পালং শাক, ব্রকলি, বেল, আপেল, বেরি, আঙুর | ফাইবার, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ |
পুরো শস্য | ওটমিল, ব্রাউন রাইস, পুরো শস্যের পাস্তা | ফাইবার যুক্ত, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক |
মাছ | স্যামন, ম্যাকেরেল, সার্ডিন | ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ |
বাদাম ও বীজ | আখরোট, আলমন্ড, চিয়া বীজ, ফ্লাক্সসীড | স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও ফাইবার যুক্ত |
অলিভ অয়েল | অলিভ অয়েল | মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের উৎস |
বিন ও লেগুম | ব্ল্যাক বিন, কিডনি বিন, লেন্টিলস | প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ |
ডার্ক চকলেট | ৭০% বা তার বেশি কোকো কন্টেন্টযুক্ত চকলেট | অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ |
সবুজ চা | সবুজ চা | অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ |
রেড ওয়াইন | রেড ওয়াইন | রেসভেরাট্রল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ (পরিমিত পরিমাণে) |
হার্টের রোগীর জন্য দুধ
হার্টের রোগীদের জন্য দুধের বিষয়ে কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত। সাধারণত, দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তবে এর স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণের কারণে হার্টের রোগীদের জন্য কিছু সাবধানতা প্রয়োজন। নিচে বিভিন্ন ধরনের দুধ ও তাদের প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
দুধের প্রকার | সুবিধা | সাবধানতা |
স্কিমড দুধ (নন-ফ্যাট) | স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম, ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ | ফ্যাটের অভাবে স্বাদ কম হতে পারে |
লো-ফ্যাট দুধ | স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম, ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন সমৃদ্ধ | সম্পূর্ণ ফ্যাটযুক্ত দুধের তুলনায় ফ্যাট কম, তবে কিছুটা ফ্যাট থাকে |
সোয়া দুধ | স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম, প্রোটিন সমৃদ্ধ, কোলেস্টেরল মুক্ত | সয়াতে এলার্জি থাকতে পারে |
বাদাম দুধ | স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম, কোলেস্টেরল মুক্ত | প্রোটিনের পরিমাণ কম |
ওট দুধ | স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম, ফাইবার সমৃদ্ধ | ক্যালোরির পরিমাণ কিছুটা বেশি হতে পারে |
ফুল-ফ্যাট দুধ | প্রচুর ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন, ভালো স্বাদ | স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি, যা হার্টের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে |
তবে, নতুন কোন খাদ্যাভ্যাস শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। বিশেষত, যদি দুধ বা দুধজাত পণ্য খাওয়ার পরে কোনোরকম অসুবিধা বা এলার্জির লক্ষণ দেখা দেয়, তবে তা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে সমাধান করা উচিত।
হার্টের রোগীর খাবার তালিকা
হার্টের রোগীদের জন্য উপযুক্ত খাবারের তালিকা নিম্নরূপ:
সকালের খাবার
- ওটমিল: ফাইবার সমৃদ্ধ ও কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক।
- ফলমূল: যেমন আপেল, বেরি, কলা ইত্যাদি।
- স্কিমড দুধ বা বাদাম দুধ: কম ফ্যাট যুক্ত।
- পূর্ণ শস্যের টোস্ট: সঙ্গে অ্যাভোকাডো বা লো-ফ্যাট পনির।
- সবুজ চা বা হার্বাল চা: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
মধ্যাহ্নভোজন
- সবজি সালাদ: লেটুস, পালং শাক, টমেটো, শসা, গাজর, বীট ইত্যাদি সঙ্গে অলিভ অয়েলের ড্রেসিং।
- গ্রিল্ড মাছ: স্যামন, টুনা বা ম্যাকেরেল।
- কুইনোয়া বা ব্রাউন রাইস: ফাইবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ।
- দই: লো-ফ্যাট বা গ্রিক দই, ফলমূল ও বাদাম মিশিয়ে।
- লেবু পানি: সাধারণ পানির সঙ্গে লেবু মিশিয়ে।
বিকালের নাস্তা
- বাদাম ও বীজ: যেমন আলমন্ড, আখরোট, চিয়া বীজ, ফ্লাক্সসীড।
- ফলের স্মুদি: বেদানা, ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি ইত্যাদি।
- গাজরের স্টিকস ও হিউমাস: হিউমাস ডিপ হিসাবে ব্যবহার।
রাতের খাবার
- গ্রিলড চিকেন বা টার্কি: কম ফ্যাট যুক্ত প্রোটিন।
- স্টিমড সবজি: ব্রকলি, পালং শাক, গাজর, বেল পেপার ইত্যাদি।
- পূর্ণ শস্যের পাস্তা বা হোল গ্রেইন রুটি: হোল গ্রেইন পাস্তা সঙ্গে টমেটো সস বা অলিভ অয়েল।
- বিন স্যুপ: ব্ল্যাক বিন, লেন্টিল ইত্যাদি দিয়ে তৈরি।
- ডার্ক চকলেট: ৭০% বা তার বেশি কোকো কন্টেন্টযুক্ত।
অন্যান্য টিপস
- পানি: পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি।
- কম লবণ: লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
- কম চিনি: চিনির পরিমাণ কমাতে হবে।
- ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন: বিশেষত ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার।
এই তালিকা হার্টের রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখতে সহায়তা করবে। যেকোনো পরিবর্তন করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
হার্টের ব্লক দূর করার খাবার
হার্টের ব্লক বা অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস প্রতিরোধ বা দূর করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট খাবার সহায়ক হতে পারে। এই খাবারগুলো রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে, প্রদাহ কমাতে, এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তবে, কোনো খাবারই একা ব্লক সম্পূর্ণ দূর করতে পারে না, তবে সুষম খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন সাহায্য করতে পারে। নিচে এমন কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো:
হার্টের ব্লক দূর করার সহায়ক খাবার
খাবার | উপকারিতা |
ফ্যাটি মাছ | স্যামন, ম্যাকেরেল, সার্ডিনে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা প্রদাহ কমায় এবং রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে। |
অলিভ অয়েল | মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ, কোলেস্টেরল কমায় এবং প্রদাহ কমায়। |
বাদাম | আখরোট, আলমন্ডে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন ও ফাইবার থাকে যা হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো। |
ফলমূল | বেরি, অ্যাপেল, কমলাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার থাকে যা কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। |
সবজি | ব্রকলি, পালং শাক, গাজর, বেল পেপার হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। |
পুরো শস্য | ওটমিল, ব্রাউন রাইস, পুরো শস্যের রুটি ও পাস্তা কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। |
বিন ও লেগুম | ব্ল্যাক বিন, কিডনি বিন, লেন্টিলস প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। |
ডার্ক চকলেট | ৭০% বা তার বেশি কোকো কন্টেন্টযুক্ত চকলেটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে। |
সবুজ চা | এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো। |
রসুন | রসুন রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। |
হলুদ | এতে কারকুমিন থাকে যা প্রদাহ কমাতে সহায়ক। |
অতিরিক্ত টিপস
- প্রচুর পানি পান করুন: শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রম সুস্থভাবে চলতে সহায়তা করে।
- কম লবণ গ্রহণ: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
- কম চিনি গ্রহণ: উচ্চ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
- নিয়মিত ব্যায়াম: হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
- ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা: হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকারক।
এই খাবারগুলি অন্তর্ভুক্ত করে সুষম খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা এবং জীবনযাত্রায় স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনলে হার্টের ব্লকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। তবে, যেকোনো পরিবর্তন আনার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
হার্টের জন্য রসুনের উপকারিতা
রসুন হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। নিচে হার্টের জন্য রসুনের উপকারিতা তুলে ধরা হলো:
উপকারিতা | ব্যাখ্যা |
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে | রক্তের LDL (খারাপ) কোলেস্টেরল কমাতে এবং HDL (ভালো) কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। |
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক | রক্তনালীগুলোকে প্রসারিত করে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। |
রক্তের জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে | রক্তকে পাতলা রাখতে সাহায্য করে, ফলে রক্তনালীর মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমে যায়। |
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ | অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে এবং হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। |
প্রদাহ কমায় | প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদযন্ত্রের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক। |
রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে | রক্তনালীকে শিথিল ও প্রসারিত করতে সাহায্য করে, যা রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং হার্টের কার্যকারিতা উন্নত করে। |
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ | রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী, এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যার ঝুঁকি কমায়। |
রসুনের ব্যবহার
- কাঁচা রসুন: কাঁচা রসুন খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। প্রতিদিন ১-২ কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খাওয়া যায়।
- রসুনের পেস্ট: রান্নার সময় বিভিন্ন খাবারে রসুনের পেস্ট ব্যবহার করা যায়।
- রসুনের তেল: সালাদ বা অন্যান্য খাবারে রসুনের তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
- রসুনের সাপ্লিমেন্ট: রসুনের সাপ্লিমেন্ট বা ক্যাপসুল আকারেও গ্রহণ করা যায়, তবে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
হার্টের জন্য উপকারী ফল
ফল | উপকারিতা |
আপেল | ফাইবার (বিশেষ করে পেকটিন), অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যা কোলেস্টেরল কমাতে এবং হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা উন্নত করতে সাহায্য করে। |
বেরি (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাসবেরি) | অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস সমৃদ্ধ যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে। |
আঙুর | পলিফেনলস সমৃদ্ধ যা প্রদাহ কমাতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং রক্তনালীকে শিথিল করতে সাহায্য করে। |
কমলা ও অন্যান্য সাইট্রাস ফল | ভিটামিন সি, ফাইবার এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস সমৃদ্ধ যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, রক্তচাপ কমাতে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। |
কলা | পটাশিয়াম এবং ফাইবার সমৃদ্ধ যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। |
আভোকাডো | মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, পটাশিয়াম এবং ফাইবার সমৃদ্ধ যা “ভালো” কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায় এবং “খারাপ” কোলেস্টেরল (LDL) কমায়। |
ডালিম (পোমেগ্রানেট) | অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা প্রদাহ কমাতে, রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। |
কিউই | ভিটামিন সি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, রক্তচাপ কমাতে এবং রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। |
পেঁপে | ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা কোলেস্টেরল কমাতে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। |
চেরি | অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্থোসায়ানিন্স সমৃদ্ধ যা প্রদাহ কমাতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। |
হার্টের জন্য ক্ষতিকর ফল
হার্টের জন্য ক্ষতিকর বলে চিহ্নিত ফল খুব কমই আছে, তবে কিছু ফল এমন আছে যা বিশেষ পরিস্থিতিতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত যদি আপনার কিছু নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো:
ফল | ব্যাখ্যা |
খেজুর (Dates) | প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকে। অতিরিক্ত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে। |
আঙুর (Grapes) | চিনি বেশি থাকে। অতিরিক্ত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। |
কাঁঠাল (Jackfruit) | চিনি বেশি থাকে। অতিরিক্ত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। |
ফলমুলের জুস | প্রাকৃতিক চিনি ঘনত্ব বেশি থাকে। অতিরিক্ত পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। |
ক্যানড ফল | চিনিযুক্ত সিরাপে থাকে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। |
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় কোন ভিটামিন
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে কিছু ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিচে কয়েকটি প্রধান ভিটামিন ও তাদের উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
ভিটামিন / উপাদান | উপকারিতা | উৎস |
ভিটামিন ডি (Vitamin D) | রক্তচাপ কমাতে ও প্রদাহ হ্রাস করতে সহায়ক | সূর্যালোক, ফ্যাটি মাছ, ডিমের কুসুম, ফোর্টিফায়েড দুধ ও সিরিয়াল |
ভিটামিন বি6 (Pyridoxine) | রক্তে হোমোসিস্টিনের মাত্রা কমাতে সহায়ক | মাংস, ডিম, দুধ, সবুজ শাকসবজি, বিন, নটস, এবং ফলমূল |
ভিটামিন বি12 (Cobalamin) | রক্তে হোমোসিস্টিনের মাত্রা কমাতে সহায়ক | মাংস, ডিম, দুধ, সবুজ শাকসবজি, বিন, নটস, এবং ফলমূল |
ফলেট (Vitamin B9) | রক্তে হোমোসিস্টিনের মাত্রা কমাতে সহায়ক | মাংস, ডিম, দুধ, সবুজ শাকসবজি, বিন, নটস, এবং ফলমূল |
ভিটামিন সি (Vitamin C) | অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে ও রক্তনালীর কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক | সাইট্রাস ফল (কমলা, লেবু), স্ট্রবেরি, ব্রকলি, এবং টমেটো |
ভিটামিন ই (Vitamin E) | রক্তের জমাট বাঁধা কমাতে ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সহায়ক | বাদাম, বীজ, পাতা-সবজি, এবং ভেজিটেবল অয়েল |
ভিটামিন কে (Vitamin K) | রক্তের জমাট বাঁধা নিয়ন্ত্রণে ও রক্তনালীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক | পালং শাক, ব্রকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউটস, এবং সবুজ শাকসবজি |
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড | প্রদাহ কমাতে ও হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী | স্যামন, ম্যাকেরেল, সার্ডিন, চিয়া বীজ, ফ্লাক্সসীড |
আমাদের শেষকথাঃ
আশাকরি, আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে খুবই সহজে হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার সম্পর্কে জানুন এবং এগুলো এড়িয়ে চলুন সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনার যদি এই বিষয়ে আরও প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে দ্বিধাবোধ করবেন না। আজকের লেখাটি ভালো লাগলে, আপনার প্রিয় বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।।